বছরের পর বছর গড়ায় তবু শেষ হয় না তনু হত্যার তদন্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক :

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের ছাত্রী ও নাট্যকর্মী সোহাগী জাহান তনু হত্যাকান্ডের ছয় বছর পূর্ণ হলো গতকাল (২০ মার্চ)। দীর্ঘ এই সময়েও তার হত্যাকারীদের চিহ্নিত করতে পারেনি পুলিশ। এতে হতাশ তনুর পরিবার। তার মৃত্যুবার্ষিকীতে পরিবার ও সহপাঠীদের পক্ষ থেকে পৃথক মিলাদ মাহফিল ও দোয়ার আয়োজন করা হয়েছে।

তনুর মা আনোয়ারা বেগম বলেন, মেয়ে হারানোর কষ্ট ভুলতে পারিনি। আর সবাই তদন্তে এসে পুরনো কথাই ঘুরেফিরে জানতে চান। কখন তনু ঘর থেকে বের হলো, কোথায় কোথায় পড়াতে যেতো, কার বাসায় যেতো, এখনও ওরা আগের অবস্থানেই পড়ে আছে। বারবার তদন্ত কর্মকর্তা বদল ছাড়া মামলার আর কোনও অগ্রগতির কথা শুনিনি। ডিএনএ রিপোর্ট আসতে ছয় বছর লাগার কথা না। আর কতদিন মেয়ের খুনের বিচারের জন্য কাঁদবো জানি না।

তনুর বাবা ইয়ার হোসেন বলেন, গত ছয় বছরে শোকে পাথর হয়ে গেছি। মেয়ে ছাড়া জীবন বিষাদময় লাগে। কাঁদতে কাঁদতে চোখের পানি শেষ হয়ে গেছে। আজ মেয়ের ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে মসজিদে দোয়া ও এতিম শিশুদের খাওয়ানোর আয়োজন করেছি। আল্লাহর কাছে দোয়া করবো, মেয়ে যেন জান্নাতবাসী হয়।

গণজাগরণ মঞ্চ কুমিল্লার সংগঠক খায়রুল আনাম রায়হান বলেন, তনু হত্যার বিচার দাবিতে সারাদেশের শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করেছে। কুমিল্লাতেও আমরা সরব ছিলাম। দীর্ঘ সময়ের পর আজও বিচার পায়নি তার পরিবার। আলোচিত একটি হত্যার শেষ পরিণতি এমন হবে ভাবতেই অবাক লাগে।

তদন্তের অগ্রগতির বিষয়ে পিবিআইয়ের ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার বলেন, সিআইডির পর আমরা দায়িত্ব পাওয়ার পর বেশি দূর এগুতে পারিনি। তবে আমরা তদন্ত অব্যাহত রেখেছি।

প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ২০ মার্চ সন্ধ্যায় কুমিল্লা সেনানিবাসের ভেতরে একটি বাসায় টিউশনি করাতে গিয়ে আর বাসায় ফেরেননি তনু। পরে অনেক খোঁজ করার পর সেনানিবাসের পাওয়ার হাউসের অদূরে ঝোঁপের মধ্যে তনুর লাশ পাওয়া যায়। তাকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয় বলে প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়। পরদিন তার বাবা ইয়ার হোসেন বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। থানা পুলিশ ও ডিবির পর ২০১৬ সালের ১ এপ্রিল থেকে মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডি কুমিল্লা।

তনুর দুই দফা ময়নাতদন্তে ‘হত্যার আগে’ ‘ধর্ষণ’ শব্দের বদলে ‘মৃত্যুর আগে’ ‘যৌন সংসর্গ’ হয়েছিল উল্লেখ করা হয়। এ নিয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ জানানো হয়। স্বজনদের অভিযোগ- নির্দিষ্ট কোনও ব্যক্তিকে বাঁচাতে এমন প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে। যেখানে লাশ উদ্ধারের পর শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন স্পষ্ট ছিল, সেখানে এমন প্রতিবেদন উদ্দেশ্য প্রণোদিত।

     আরো পড়ুন....

পুরাতন খবরঃ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০  
error: ধন্যবাদ!